আরিফ সুমন / অনলাইন ডেস্ক।।
দুই মাস ধরে পানিবন্দী হয়ে আছে পটুয়াখালীর মহিপুর থানা সদর ইউনিয়নের একমাত্র মহিপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। মহিপুর সদরের ইউনিয়নের প্রায় বিশ হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবাদানের এমাত্র প্রতিষ্ঠান।কিন্তু এই দুই মাসের মধ্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতিকার ব্যবস্থা নেয়ার উদ্বেগ তেমন চোখে পড়েনি।
সরেজমিনে দৃশ্যমান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রর সামনে অবস্থিত পকুরে বৃষ্টির পানি জমে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দুই মসের অধিক সময় ধরে পানিবন্দী হয়ে আছে মহিপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। বাঁশের তৈরি সেঁকো দিয়ে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তার মধ্যে অধিকাংশ নারী ও শিশু।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, মহিপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পিছনের পাউবো’র জমি অবৈধ বালু ভরাট করে বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে করে কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। যার ফলে তার জমে থাকা অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন না হতে পারায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাই দুমাস ধরে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে অত্র অঞ্চরের মানুষদের। এক দিকে সেঁকো দিয়ে পাড় হয়ে নিতে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা, অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনটি। দুই মিলে অত্র অঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার মানুষে চিকিৎসা সেবা চরম বিপর্যের মুখে। এই জলাবদ্ধতা দ্রুত নিষ্কাশন না হলে, যে কোন মুহূর্তে বড় দূর্ঘটানার কবলে পরতে পারে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরাজীর্ণ ভবনটি।
কর্তৃপক্ষের তথ্যসূত্রে, ৫৬ শতাংশ জমি নিয়ে ১৯৫০ সালে মহিপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি স্থাপিত হয়। প্রথম দিকে টিন সেটের ঘর ছিল। এর পর ১৯৯৫ সালে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপ্তর এটিকে দ্বিতল ভবন নির্মান করে। স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, তৎকালীন সময়ে কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে ভবনটি নির্মানে নিম্ন মানের মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে। যার কারনে মাত্র ২৫ বছরের মধ্যেই এটি জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে। ভবনের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। একদিকে ঝুঁকিপূর্ণ জরাজীর্ণ এই ভবন, অন্যদিকে ২ মাস ধরে পানিবন্দি। এই অবস্থায় গর্ভবতি নারীসহ সাধারন মানুষকে সর্বাত্বক ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হয এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এখানে বেশীরভাগ উপকুলীয় মৎস্য বন্দর মহিপুরের জেলে ও গর্ভবতী মা স্বাস্থ্য সেবা নিয়মিত পেয়ে থাকে। পানি বন্দি থাকায় সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়ছে গর্ভবর্তী মা ও শিশুরা। তাই বর্তমানে পানিবন্দী অবস্থায় এই জরাজীর্ণ ভবন যেকোন সময় ধ্বসে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রোগীসহ সাধারন মানুষ এবং কর্তব্যরত কর্মীদের প্রতিমুহূর্ত কাটছে অজানা শঙ্কায়। সেই সাথে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেবা দানে তন্যতম সমস্যা উপযুক্ত জনবল সঙ্কট। কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এম,বি,বি এস চিকিৎসক নিয়োগ একজন এস,পি আই নিয়োগ একজন, এফ, ডাব্লিউ,ভি কর্মকর্তা নিয়োগ পাঁচ জন , মেডিকেল(ফার্মা) নিয়োগ একজন, নাইট গার্ড একজন, আয়া একজন। কিন্তু এর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন এফ,ডাব্লউ,ভি একজন, নার্স একজন, মেডিকেল এস,এ,সি,এম,ও একজন ছাড়া বাকি পদ গুলো এখনো শুন্য রয়েছে।
মহিপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্মরত চিকিৎসক শ্রী সুদিব কুমার পাল জানান, পাউবোর জমিতে বালু ভরাট বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানের জন্য পূর্বের পানি নিষ্কাশনের পথে বন্ধ হয়ে যায়। যার কারনে ২ মাস ধরে পানিবন্দী হয়ে আছে মহিপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। পানিবন্দি থাকার কথা কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানো হয়েছে, এবং একাধিক বার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।