আরিফ সুমন (ডেস্ক রিপোর্ট )।।
পটুয়াখালী জেলাধীন মহিপুর থানার কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবল না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। আধুনিক চিকিৎসা উপকরণ থাকা সত্ত্বেও, দীর্ঘদিন ধরে স্বাথ্যসেবা বঞ্চিত মহিপুর থানাধিন ৪ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ। কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের স্বাস্থ্যসেবা পেতে পোহাতে হয় চরম দূর্ভোগ।
সূত্র মতে, কুয়াকাটায় তিন একর জমির উপর প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এর উদ্বোধন করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসপাতালটিতে তিন ইউনিটের একটি আধুনিক দ্বিতল চিকিৎসা ভবন, সেবিকা ভবন, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য দুটি আবাসিক ভবন এবং সেবা প্রদানের জন্য ৬ জন এমবিবিএস ডাক্তার, ৫ জন নার্স, ২ জন ওয়ার্ড বয়, ১ জন করে এমএলএসএস, ঝাড়–দার, মালি, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ল্যাব সহকারি, ফার্মাসিস্ট, অফিস সহকারি, কুক সহ মোট ২৩ জন জনবল দেয়া হয় । শুরুতে ডাক্তার, নার্স, আয়াসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারী থাকলেও ,বর্তমানে হাসপাতালটিতে নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক জনবল। মাত্র ১ জন এম,বি,বি,এস চিকিৎসক, ২ জন নার্স এবং ১ জন ওয়ার্ড বয় দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে হাসপাতালটি। স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিকাংশ চিকিৎসকই নিজেদের সুবিধার্থে এখানে যোগদানের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে তদবির করে অনত্র বদলি হয়ে যায়। যার ফলে চিকিৎসা সেবা পেতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে পর্যটকসহ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। তার মধ্যেও কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রায়ই থাকেন লম্বা ছুটিতে। জরুররী সেবা নিতে আসলে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান ফটক বন্ধ। আবার কখনো কখনো জরুরী বিভাগ কক্ষ থাকে চিকিৎসক ও নার্স শূন্য। কখনও আবার নার্স এবং ওয়ার্ডবয় দ্বারা নিতে হয় জরুরী চিকিৎসা সেবা। দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসক না থাকায় কোন রকম চিকিৎসা নিয়েই ছুটতে হয় কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে। এমন কি জরুরী বিভাগের আলমারিতে বাসা বেঁধেছে চড়ুঁই পাখি। আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত অপারেশন থিয়েটার, ল্যাব, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড, সেবিকা কক্ষ, চিকিৎসক কক্ষ, পাম্প হাউজ রয়েছে ও পর্যটক বিবেচনায় ভিআইপি কক্ষ রয়েছে এলোমেলো আবস্থায় ফাঁকা।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার ২ নং প্যনেল মেয়র ও ০৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ শহিদ দেওয়ান বলেন, কুয়াকটা পর্যটক সেবার বড় একটি অংশ স্বাস্থ্যসেবা। যেহেতু হাসপাতালটি বর্তমানে জনবল শুন্য, তাই নিঃসন্দেহে পর্যটকসহ পৌরসভার জন সাধারন চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছ। কুয়াকাটক পৌর প্রশাসন এই সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তিপক্ষকে আবগতি করার পরও জনবল নিয়োগ হচ্ছে না।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র মোঃ আনোয়ার হাওলাদার বলেন, মহিপুর- কুয়াকাটা স্থানীয় জনগনসহ কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের স্বাস্থ্যসেবার এক মাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান এটি।
এই হাসপাতালে ১ জন চিকিৎসক দ্বারা স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে বলেই অধিকাংশ মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও চিকিৎসক নিয়োগ কারা হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন,এই হাসপাতাটিতে কর্তৃপক্ষ যাহাতে অবিলম্বে পর্যপ্ত জনবল নিয়োগ প্রদান করে তার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার জানান, জনবল নিয়োগ না থাকায় বর্তমানে হাসপাতালটিতে একজন এম,বি,এ,এস চিকিৎসক দ্বারা স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিভিল সার্জন অফিসে অনুরোধ জানানো হয়েছে।