ডেস্ক রিপোর্ট।। মহিপুর থানার পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় বাস স্ট্যান্ড টার্মিনাল এলাকায় পটুয়াখালী আন্ত:জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ওp মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন নামে একটি সংগঠন কুয়াকাটার টার্মিনাল থেকে গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় প্রতি গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, ওই সংগঠনের লোক কুয়াকাটা হতে যে সকল গাড়ি বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যায় সে সকল গাড়ির প্রতি পরিবহণ থেকে নেয়া হয় এক‘শ (১০০) টাকা এবং প্রতিটা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস থেকে নেয়া হয় পঞ্চাশ (৫০) টাকা করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, খুলনা থেকে ২৫১১ নম্বর নিবন্ধন কৃত ‘পটুয়াখালী আন্ত:জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন‘ নামে একটি সংগঠনের অফিস নিয়ে প্রতিনিয়ত গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করছে। তবে চাঁদা আদায়ের রশিদও দেয়া হচ্ছে। রশিদ দিয়ে টাকা আদায় করে দেখে এলাকাবাসী অনেকেই হতবাগ এ যেন অন্ধের দেশে কানা রাজা গল্পের মতো। সংগঠনের নীতিমালায় গাড়ি থেকে টাকা আদায়ের কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনী তারা।
এই ব্যাপারে সংগঠনের সভাপতি মো: ছগির মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা দেশেই শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যক্রম চলমান আছে, তারই ধারাবাহিকতায় আমরাও ‘পটুয়াখালী আন্ত:জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন‘ বিভাগীয় শ্রম দপ্তর এর গঠনতন্ত্র মোতাবেক টাকা আদায় করছি। বিশেষ করে আমাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রতি বছর কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করে দেখবেন।
উল্লেখ্য যে, পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় দেশী বিদেশী হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক ঘুরতে এসে বাস টার্মিনাল না থাকায় পড়তেন ভোগান্তিতে। সম্প্রতি দীর্ঘ বছরের প্রত্যাশিত কুয়াকাটা বাস টার্মিনাল এর চলমান কাজের মধ্যে এর শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা করে কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে এ বাস স্ট্যান্ডকে কেন্দ্র করে এখানে প্রথমে খুলনা শ্রম দপ্তর এর নিয়ন্ত্রণাধিন ৭৩৪ নম্বর নিবন্ধনের বলে ‘পটুয়াখালী জেলা সড়ক পরিবহন বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রকিক ইউনিয়ন‘ কর্তৃপক্ষ কুয়াকাটায় একটি উপ-কমিটি দেন, যার স্মারক নং ১৪৯/২/২০২২ইং, তারিখ ০২-০৮-২০২২ইং।
পরবর্তীতে একইভাবে ৭৩৪ নম্বর নিবন্ধনের বলে ০৩-০৫-২০২৩ইং তারিখ ‘পটুয়াখালী জেলা সড়ক পরিবহন শ্রকিক ইউনিয়ন‘ নামে আরেকটি উপ-কমিটি দেয়া হয়। এছাড়া ৭৩৪ নম্বর একই নিবন্ধনের বলে ‘পটুয়াখালী জেলা সড়ক পরিবহন শ্রকিক ইউনিয়ন‘ নামে পূনরায় আরেকটি উপ-কমিটি কমিটি দেয়া হয়, যার স্মারক নং ১৫২/২/২০২৩ইং, তারিখ ১৮-০৬-২০২৩ইং। এইভাবে একের পর এক উপ-কমিটি প্রদান ও বিলুপ্তির কারণে কুয়াকাটা বাস স্ট্যান্ড এর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যক্রম বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
পরিশেষে প্রথমে যাদেরকে উপ-কমিটি দেয়া হয়েছিল তারা খুলনা শ্রম দপ্তর থেকে সরাসরি কুয়াকাটা বাস স্ট্যান্ডে ‘পটুয়াখালী আন্ত:জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন‘ নামে একটি সংগঠনের নিবন্ধন এনে কার্যক্রম চালাচ্ছেন, যার রেজি নম্বর, খুলনা-২৫১১, তারিখ ২৭-০৮-২০২৩ইং। তাই পটুয়াখালী থেকে প্রথমে উপ-কমিটি পেয়ে পরবর্তীতে আবার তা বিলুপ্তি করায় খুলনা শ্রম দপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে আইনের তোয়াক্কা না করে তারা চাঁদা আদায় করছে বীর দাপটে এমন এন্তার অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ফেরদৌস আলম খান বলেন, শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের কাগজ পত্র দিয়েছে, সংগঠনের নীতিমালায় কি আছে জানি না, তবে কাগজ পত্র পর্যালোচনা করে দেখতেছি, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব। এব্যাপারে কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো: আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ওদের রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ঠিক আছে কিনা দেখেন এবং টাকা উঠানোর বিধান থাকলে উঠাবে, বিধান না থাকলে উঠাবে না। তবে আমার জানামতে সারা দেশে শ্রমিক ইউনিয়নের এমন সংগঠন বিদ্যমান আছে।