ডেস্ক রিপোর্ট।।
হঠাৎ করে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে বঙ্গোপসাগরে। পটুয়াখালীর মহিপুর দেশে মাছের অন্যতম বড় পাইকারি মৎস বন্দর। বর্তমানে মহিপুর থানাধীন সব কয়টি মৎস বন্দরেই ইলিশ ছাড়া অন্য কোন মাছ চোখেই পড়েনা। প্রতিদিন গড়ে শতাধিক বড়-ছোট বাণিজ্যিক ট্রলার মহিপুর থানার বিভিন্ন মৎসবন্দরে ইলিশ নামাচ্ছে প্রায় ১ হাজর মেট্রিক টন। ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকার কারণে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি আড়ৎদার ও জেলেরা কিন্তু মাছের চড়া দাম থাকায় হতাশা প্রকাশ করলেন পাইকারী ও খুচরো ক্রেতা ও বিক্রেতা। মহিপুর থানাধীন উপকূলীয় এলাকার মৎস্য বন্দর গুলোতে বর্তমানে বেশী দাম থাকলেও ইলিশ বেচাকেনা চলছে হরদম। দিন রাত চোখে পরার মতো কর্মব্যাস্ততা মৎস আড়ৎ গুলোতে।
মহিপুর মৎস্য বন্দর সহ আলিপুর ও কুয়াকাটা প্রায় দুই শতাধিক মৎস আড়ৎ রয়েছে। এসব আড়দে প্রতি দিন প্রায় হাজার মেট্টিক টন মাছ বেচাকেনা হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে ইলিশের ধরে জেলেদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে, তেমনি দাম বেশী থাকায় পাইকারি, খুচরো বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মনে রয়েছে ক্ষোভ । সরেজমিনে, ৬ ই সেপ্টেসম্বর (সোমবার) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মহিপুর মৎস বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, শত শত মন ইলিশ নিয়ে বন্দরে ফিরে এসেছে জেলেরা। প্রতিটি ট্রলারে এবার চাহিদা মতো ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি জেলেসহ ও মৎস্য সংশ্লিষ্ট আড়ৎদারা। তীরে আসা এসব ইলিশ মৎস আড়ৎ গুলোতে উঠিয়ে বিক্রয় কার হচ্ছে প্রকারভেদ। প্রতিমন ইলিশ বিক্রয় হচ্ছে ১২ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা। আড়ৎদার ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারিভাবে জাটকা মারা নিষিদ্ধ আর ভরা মৌসুম হওয়ায় জেলেদের জালে আটকা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। জানালেন, আগামীতে আরো বেশি মাছ ধরা পড়ার সম্ভাবনার কথাও। পাইকারি ব্যবসায়ী মোঃ হালিম হাওলাদার বলেন, জেলেদের জালে এই মৌসুমে ইলিশ ধরা পড়ছে চাহিদা মতো, কিন্তু দাম বেশী থাকায় আমরা যারা মাছ কিনে ব্যবসা করি তারা চাহিদা মতো কিনতে পরছি না। এই মাছ কিনে পরিবহনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থনে পাঠাতে হয়। আড়ৎদার সহ ট্রলার মালিকদের ব্যবসা হলেও, দাম না কমলে আমাদের ব্যবসা হবে না। সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষুদ্র মৎস ব্যবসায়ীরা এসব ইলিশ কিনে ট্রাক, পিকআপ ও বিভিন্ন পরিবহন যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করছেন। বড় সাইজের (১ কেজির উপরে) ইলিশ দেশের বাহিরে রপ্তানিও করা হচ্ছে।
মহিপুর বন্দরের মেসার্স আল্লাহ ভরসা মৎস্য আড়ৎদের মালিক মোঃ লুনা আকন জানান, বর্তমান বাজারে ১ কেজির উপরে বড় সাইজ প্রতি মন ৪৩ হাজার থেকে ৪৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। এক কেজির নিচে এবং ৮ শ গ্রামের উপরের সাইজের মাছ প্রতি মন ২৩ হাজার থেকে ২৫ হাজর টাকা, ৫শ গ্রামের উপরের মাছ ১৭/১৮ হাজার টাকা এবং ৫শ গ্রামের নিচের মাছ ১২/১৪ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। আলিপুর- কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ দিদার উদ্দিন মাসুম বেপারী বলেন, সরকারের রাজস্বে বড় একটি স্থান পূরণ করে দেশের মৎস ভান্ডার। তাছাড়াও আমাদের দক্ষিনাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের আয়ের উৎস মৎস ব্যবসা অথবা জেলে সংশ্লিষ্ট। গত চারদিন ধরে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। দামও আগের তুলনায় কিছুটা কম। এভাবে ১৫ দিন মাছ ধরা পড়লে দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে হবে।তখন জেলেসহ সকলেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে।