আরিফ সুমন ( ডেস্ক রিপোর্ট)।। সরকার ঘোষিত মা ইলিশ রক্ষায় মাছ নিধনের ওপর ২২ দিন মৎস শিকারে নিষেধাজ্ঞা শেষে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে রওনা দিয়েছে উপকূলীয় জেলেরা। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর-আলিপুর মৎস্য বন্দর ও বিভিন্ন জায়গা থেকে সোমবার (২৮ অক্টোবর) শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বেশকিছু মাছ ধরার ট্রলার গভীর সাগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। তবে বরফের কারণে এখনও অনেক ট্রলার বা ফিসিং বোট মৎস্য বন্দরগুলোতে অবস্থান করছে। মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ ই অক্টোবর থেকে মা ইলিশের বাঁধাহীন প্রজননের জন্য নদী ও সাগরে মাছ শিকার নিষিদ্ধ করে সরকার। এসময় ইলিশ পরিবহন, মজুদ, ক্রয় -বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ ছিলো। ইলিশের এ অবরোধ সফল করতে জেলা মৎস্য বিভাগ, নৌ-বাহিনী, থানা পুলিশ ও নৌ- পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে এবার বেশিরভাগ জেলেরাই সাগরে মাছ শিকার থেকে বিরত ছিলেন বলেও জানিয়েছে তারা। দেশের অন্যতম মৎস্য বন্দর আলীপুরের জেলে মনির মাঝি বলেন, সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আমরা পালন করেছি। আমরা এরই মধ্যে ইলিশ মাছ ধরার সব প্রস্তুতি শেষ করেছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় অপেক্ষায় আছি। আবহাওয়া অনুকলে থাকলে আজ মধ্য রাতে মাছ শিকারে যাবো।
মহিপুর মৎস্য বন্দরের একাধিক জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর ইলিশের ভরা মৌসুমে মাছ না পাইলেও শেষ মুহুতে অনেক মাছ পেয়েছি।আরো বলেন, কারণ নিষেধাজ্ঞা মেনে কিনারায় আসার পথে জেলেরা মন কে মন মাছ পেয়েছে । এবং নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে প্রচুর পরিমাণ মাছ হবে বলে ধারণা ছিলো তাদের। তাই আরাম আয়েশ বাদ দিয়ে অনেক মাছ ধরার স্বপ্ন বুকে নিয়ে জাল বুনেছি। সময় শেষে আজ রাত থেকে ধরবো মাছ।
আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, মহিপুর-আলিপুর থেকে শত শত ট্রলার ইলিশ আহরণের জন্য গভীর সাগরের উদ্দেশে যায়। টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সকাল থেকে ট্রলার বা ফিসিং বোটগুলো বরফ নিয়ে সমুদ্রে যাচ্ছে। ভোরেও কিছু ট্রলার গিয়েছে তবে বরফের কারণে নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ার পরপরই তেমন কোনো বোটই সাগরে যেতে পারেনি।২/১ দিন বাদে বোটগুলো ফিরে আসলে সাগরে ইলিশের উপস্থিতি সম্পর্কে জানা যাবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, বিকেলে স্থানীয় নদীর কিছু মাছ উঠতে পারে আলিপুর ও মহিপুর বাজারে। তবে বাজার জমতে ২/১ দিন অপেক্ষা করতে হবে।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেছেন, এবার ২২দিন অবরোধ আমাদের অনেকটা সহযোগিতা করছে জেলেরা সকাল থেকে দেখছি জেলেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে, গভীর সমুদ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবার সরকারি তরফ থেকে জেলেদের সহযোগিতা করা হয়েছে, তিনি আরো বলেন, আমরা দিন-রাত মা ইলিশ রক্ষায় কাজ করেছি। আশা করছি, আমরা এ বছর শতভাগ সফল হয়েছি। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, অবরোধ চলাকালীন সময় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিসহ বজ্রপাতও ও বন্যা হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে সব ডিমওয়ালা মা মাছ দ্রুত ডিম ছেড়ে দেয়। এতে সমুদ্রে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ মাছ ধরা পড়বে জেলেদের জালে।