বিশেষ প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় মাদক ব্যবসার জের ধরে রায়হান নামে এক যুবককে অপহরণ করে বনের মধ্যে নিয়ে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ভিডিও ভাইরাল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। নজরে আসে রায়হানর পরিবারের। এ ঘটনায় মহিপুর থানায় অভিযোগ করেন রায়হানের বাবা কাসেম মাঝি। অভযোগের ২দিন অতিবাহিত হলেও রায়হানকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানান, রায়হান এবং অপহরণকারীগণ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি। মাদক উভয়ের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এ অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা। সামাজিক যোগাযোগে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে লতাচাপলীর ইউনিয়নের ফাঁসিপাড়া গ্রামের নেছার সিকদারের ছেলে ইমাম শিকদার (ইমন), পশ্চিম কুয়াকাটা গ্রামের আইয়ূব আলী খানের ছেলে ইলিয়াস সহ ৪/৫ জন যুবক বনের মধ্যে গাছে বেধে নির্যাতন করছে রায়হানকে।
রায়হানের পরিবার জানান,অপহৃত যুবক মহিপুর থানা সদরের আবুল কাশেম মাঝির ছেলে রায়হান (২২) গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তার শ্বশুর বাড়ি বরগুনা জেলার তালতলির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যায়। যাওয়ার সময় তার সাথে ১ লক্ষ টাকা ও তার নিজের মটরসাইকেল এবং একটি মোবাইল সেট ছিলো। ওইদিনই সন্ধায় রায়হানের স্ত্রী স্বামী রায়হান কে ফোন করে অবস্থান জানতে চাইলে মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে ধস্তাধস্তির আওয়াজ শুনতে পান। এর কিছুক্ষণ পরে লাইন কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এঘটনার পর পরিবারের লোকজন রায়হানকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে স্থানীয় শাজাহান শিকদারের মাধ্যমে রায়হানের বাবা আবুল কাশেম এর ফেসবুকে ছেলের নির্যাতনের একটি ভিডিও দেখতে পান।
এরপর রায়হানের পিতা আবুল কাশেম শুক্রবার বিকালে বাদী হয়ে ইমাম সিকদার, মসিউর, ইমরান, বিপ্লব শীলের নাম উল্লেখ করে আরও ৪-৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে মহিপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর ২ দিন অতিবাহিত হলেও অপহৃত কিশোর রায়হান ও আসামিদের কাউকেই আটক করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ।
রায়হানের পিতা আবুল কাশেম বলেন, ইমাম সিকদার তার ব্যবহৃত (০১৩০৮৫৭৯২২০) এই নম্বর থেকে ফোন করে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে আপনার ছেলেকে আমরা ছেড়ে দিয়েছি, বেশি বাড়াবাড়ি করলে আরো খারাপ হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযযুক্ত আসামিরা এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারী। মাদক কারবারের দায়ে একাধিকবার তারা পুলিশের হাতে আটকও হয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা আসামিদের আটকের জন্য অভিযান পরিচালনা করছি এবং অপহৃত রায়হানকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। ###