পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, নারী ও পুরুষের জন্য ৫০:৫০ বরাদ্দ দিলেই ন্যায্যতা আসবে তা বলা যায় না, নারী পুরুষের চাহিদার ক্ষেত্র ভিন্ন- এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার। জেন্ডার বাজেট মনিটরিং প্রতিবেদন ও জনচাহিদা তৈরির ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি আমাদের উন্নয়নে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সূচক যা দ্রুত কমিয়ে আনতে হবে। আগামীতে জেন্ডার সংবেদনশীলতাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প তৈরি করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘জেন্ডার বাজেট মনিটরিং’ বিষয়ক গবেষণা কার্যের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘জেন্ডার বাজেট মনিটরিং’ বিষয়ক গবেষণা কার্যের ফলাফল নীতিনির্ধারক ও অন্যান্য অংশীজনদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
প্রতিমন্ত্রী ড.শামসুল আলম বলেন, আজকের তথ্যবহুল এই গবেষণার ফলাফল মিডিয়ায় প্রচার হওয়া দরকার। প্রণীত নীতিমালা বাস্তবায়নে বিভিন্ন সমস্যা আছে; নানা স্টেকহোল্ডার চলে আসে। বহু জনস্বার্থ, অভ্যন্তরীণ চাপ আছে। নাগরিক সমাজের বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা ও পর্যালোচনা হওয়ার দরকার যাতে জনচাহিদা তৈরি হয়। বর্তমান রাজনৈতিক আলোচনার মধ্যেও অর্থনৈতিক আলোচনাগুলো আসাও জরুরি।
তিনি বলেন, জেন্ডার বাজেট প্রণয়নে ইতিবাচক সাড়া আসার পরিপ্রেক্ষিতে ৪৪টি মন্ত্রণালয়ে এখন জেন্ডার বাজেট আছে। ২৫ থেকে ৩৪ শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই বরাদ্দ বৃদ্ধি প্রকৃত উন্নয়ন আনছে কিনা তা দেখতে হবে। বাজেটের ৪৩ শতাংশ এখন জেন্ডার সংবেদনশীল এটা প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি যা বেশ অগ্রগতি বলে মনে করি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান ও ডিবিসি নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার ইশরাত জাহান ঊর্মী বলেন, আগামী পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নারী সম্পর্কিত কার্যক্রম এবং এসডিজি বাস্তবায়নের পরিস্থিতি নিরূপণ, বিভাজিতভাবে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে কিনা তার উপর জোর দিতে হবে; নারীদের মধ্যে যারা প্রান্তিক নারীর তাদের জন্য বাজেটে আলাদা বরাদ্দ করা যায় কিনা সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেটকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে নারী আন্দোলন। সংগঠনের দীর্ঘ দিনের আন্দোলন ও অ্যাডভোকেসি কর্মসূচির ফলে সরকারের জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন নারী আন্দোলনের একটা বড় অর্জন।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, গবেষণা করতে গিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতার দিককে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পলিসি ডকুমেন্ট হলো বাজেট। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বলা হয়, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পলিসি ডকুমেন্ট তৈরিতে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, জেন্ডার বাজেটের প্রায়োগিক দিক কেমন তা আমরা জানি না। জেন্ডার বাজেটে কোন ক্ষেত্রে কতটা বরাদ্দ আছে, জেন্ডারগত কৌশল চাহিদা কতটুকু পূরণ হলো তা নিরূপণের জন্য এ গবেষণা করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর অগ্রগতির সূচকে আমাদের স্থায়িত্ব নেই। এখানে নারী আন্দোলনের সাবধান হওয়ার ব্যাপার আছে। আমরা নানা কর্মসূচি নিচ্ছি কিন্তু নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জোর দিতে হবে। নারীর জন্য পলিসি নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য পলিসির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সামগ্রিক দিক বিবেচনায় নিতে হবে। আর্থিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নারীর সমতার ইস্যুকে সম্পৃক্ত করা না হলে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না, আমাদের অর্জনকে ধরে রাখা যাবে না।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/amaderkuakata/public_html/wp-includes/functions.php on line 5737caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/amaderkuakata/public_html/wp-includes/functions.php on line 5737