কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা খুন, ছিনতাই-চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি ও ইভটিজিং এবং মাদক ব্যবসার মতো অপরাধে বেশি জড়াচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে তাদের নিয়ন্ত্রক বা পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায় সমাজের কিছু ‘বড় ভাই’।
মহিপুর থানা প্রতিনিধি।।
দেশব্যাপী অপরাধ জগতে এখন ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম কিশোর গ্যাং। পটুয়াখালীর মহিপুর থানা সদরে কিশোর গ্যাং এর হামলায় সাংবাদিক সহ দুজনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২১ মে শনিবার রাত আনুমানিক ৯ টা ৩০ মিনিটের দিকে শেখ রাসেল সেতুর উপরে সাংবাদিক সহ দুজন কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রসীদের হামলার শিকার হয়। সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে জানা যায়, মহিপুরের কিশোর গ্যাং লিডার খলিল (২২) এর নেতৃত্বে হাসিব, নিরব, সুমন খান সহ আনুমানিক ২০-২৫ জন রাকিব (২০) নামের এক কিশোরের উপরে হামলা চালায়। এ সময় তাকে ছুড়ি দিয়ে হাতে ও কোমরে গুরুত্ব জখম করে। দৈনিক আলোকিত সকাল প্রত্রিকার সাংবাদিক মোঃ হাসান (২৬) সেখানে ছবি তুলতে গেলে তার উপরেও অতর্কিত হামলা চালায় এবং তার হাতে থাকা মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে ঐ গনমাধ্যম কর্মীর চোখে ও মাথায় আঘাত লাগে।
আহতরা বর্তমানে কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। মহিপুর কিশোর গ্যাং এর প্রধান মোঃ খলিল (২২) মহিপুর ওয়াবদা কলনীর মাছ বিক্রেতা মোঃ সাদেক হোসেনের ছেলে। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই মহিপুরে খলিল গ্রুপের প্রধান খলিলের নেতৃত্বে সংবদ্ধ কিশোর গ্যাং গ্রুপ মহিপুর এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এবং তাদের হামলায় সাবেক ইউপি সদস্য, এইচএসসি পরিক্ষার্থী, এবং সাধারণ স্কুল /কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল চালকদের উপর একাধিকবার হামলার চালানো হয়েছে। মহিপুর এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এতোটাই বেপরোয়া যে তার বর্তমানে, ছিনতাই-চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি ও ইভটিজিং এবং মাদক ব্যবসার মতো অপরাধে জড়িয়ে গেছে। তাদের নিয়ন্ত্রক বা পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায় সমাজের কিছু ‘বড় ভাই’ অথবা রাজনৈতিক নেতা।
সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারাদেশে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়া থেকে শুরু করে অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণকারীদের ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। দেশের নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, প্রেমের বিরোধ, মাদক খুনাখুনীসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। গত ৩ বছরে এসব ঘটনায় চার শতাধিক কিশোরকে আসামি করা হয়েছে। নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। অধিকাংশ কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার পেছনে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীর মদদের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোন্দকার মো:আবুল খায়ের বলেন আমরা খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে আহতদের চিকিৎসা জন্য পাঠানো হয়েছে এবং অপরাধীদের কাউকে পাওয়া যায় নি কিন্তু খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা এই গ্যাং কে আইনের আওতায় আনতে পারবো এবং আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।